সংবাদচর্চা রিপোর্ট:
কুখ্যাত চাঁদাবাজ ও অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী খন্দকার কামাল ওরফে সাগর ওরফে এম কে সাগর (৪৫) ও তার দুই সহযোগীকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-১১। গত ৩ নভেম্বর রাতে সিদ্ধিরগঞ্জের মৌচাক এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃত অপর আসামিরা হলেন মোঃ মোশারফ হোসেন (৩৪) , মোঃ আমিনুল ইসলাম (২৫) । তাদেরকে অস্ত্র ও জাল টাকাসহ গ্রেফতার করা হয় ।
বৃহস্পতিবার ( ৪ নভেম্বর) এক প্রেস ব্রিফিংয়ে র্যাব-১১ এর অধিনায়ক ( নারায়ণগঞ্জ) লেঃ কর্ণেল তানভীর মাহমুদ পাশা এসব তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি জানান, চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের জন্য সাগর অবৈধ অস্ত্র ব্যবহার করত। এছাড়াও মানুষের সরলতা ও আবেগকে পুঁজি করে আস্থা ও বিশ^াস অর্জনের জন্য সে তৃণমূল আওয়ামী লীগ নামক এক ভুঁইফোঁড় রাজনৈতিক সংগঠন প্রতিষ্ঠা করে। ভুক্তভোগীদের বিভিন্ন সময় অস্ত্রের ভয়ভীতি প্রদর্শন ছাড়াও এবং চাঁদার অর্থ না পেলে সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করতে তাদের ব্যক্তিগত ও পরিবারের নারী সদস্যদের ছবি এডিট পূর্বক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করার হুমকি প্রদান করে।
এছাড়াও মাননীয় প্রধানমন্ত্রীসহ বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সঙ্গে তার সখ্যতার প্রমাণ হিসেবে এডিট করে নিজের ছবি সংযুক্ত করে এবং ভুয়া মেসেজ আদান প্রদানের স্ক্রিনশট প্রদানের মাধ্যমে নিজেকে প্রভাবশালী প্রমাণের চেষ্টা করতেন এবং পরবর্তীতে যখন প্রতারিত ব্যক্তি বিষয়টি বুঝতে পারতেন তখন অস্ত্রের ভয়ভীতি প্রদর্শন করতেন। এসএসসি পাস দাবিকৃত এই ব্যক্তির বিরুদ্ধে প্রলোভন দেখিয়ে মোটা অংকের অর্থ গ্রহণ ছাড়াও প্রতিশ্রুতি প্রদানের মাধ্যমে প্রতারণা, জাল টাকার কারবার ও নারী পাচার এর অভিযোগও রয়েছে।
পাশা জানান, অনলাইন তথা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকেই অধিকাংশ ক্ষেত্রে প্রতারনার প্রাথমিক ফাঁদ হিসেবে ব্যবহার করে আসছিল এম কে সাগর। ভুক্তভোগীদের আকৃষ্ট করতে নানা সময়ে সে রাজধানীর বিভিন্ন অডিটোরিয়াম ভাড়া নিয়ে ছোটো খাটো দলীয় সভা সমাবেশের আয়োজন করে। এ সকল অনুষ্ঠানে ছবি ও ভিডিও সে ব্যবহার করে তার বিশ^াসযোগ্যতা বাড়ানোর জন্য। তার প্রতিষ্ঠিত কথিত ভুঁইফোঁড় সংগঠনটির সেমিনার এর ভিডিও, বেশ কিছু ভুয়া নথি, চুক্তিপত্র, ব্যানার ও ভিজিটিং কার্ড র্যাব-১১ কর্তৃক উদ্ধার করা হয়েছে। খন্দকার কামাল ওরফে সাগর ওরফ এম কে সাগর মূলত ৫নং মঙ্গলকোট, কেশবপুর, যশোর এর অধিবাসী। তিনি দীর্ঘদিন যাবৎ রাজধানী ঢাকার অদূরবর্তী অঞ্চল সাভার এর আশুলিয়া থানার গাজিরচট এলাকায় অবস্থান করেন এবং এ স্থান হতেই তিনি দেশের বিভিন্ন স্থানে অপকর্মগুলো সম্পাদন করে । গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন।